উয়ারী বটেশ্বরের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস ও প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্যের ভাণ্ডারে উয়ারী বটেশ্বরের নাম আজ বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় দুই হাজার বছরেরও বেশি প্রাচীন এই নগরী ও জনপদ ছিল বাণিজ্য, সংস্কৃতি ও নগরায়ণের এক অনন্য কেন্দ্র। প্রত্নতাত্ত্বিক খননে এখানে আবিষ্কৃত মুদ্রা, মৃৎপাত্র, দুর্গপ্রাচীর, কাচের দানা, লোহার সামগ্রী, এবং নৌবাণিজ্যের চিহ্ন এ অঞ্চলের সমৃদ্ধ অতীতকে তুলে ধরে। গবেষকদের মতে, এটি ছিল প্রাচীন জনপদ “সুবর্ণবিত্তি”, যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে রোমান সাম্রাজ্য পর্যন্ত বাণিজ্য নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত ছিল।
উয়ারী বটেশ্বর কোথায় কোন জেলায় অবস্থিত
উয়ারী বটেশ্বর বাংলাদেশের নরসিংদী জেলার বেলাবো ও শিবপুর উপজেলায় অবস্থিত। ব্রহ্মপুত্র নদীর পুরনো প্রবাহপথের নিকটে এ জনপদ গড়ে উঠেছিল। নদীপথের সহজলভ্যতা একে প্রাচীন নৌ-বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত উপযোগী করে তুলেছিল। একটি প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। এটি ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত এবং এখানে একটি সুরক্ষিত নগর কেন্দ্র, পাকা রাস্তা ও প্রাচীন মানব সভ্যতার অনেক নিদর্শন পাওয়া গেছে।
উয়ারী বটেশ্বর আবিষ্কারের ইতিহাস
উয়ারী বটেশ্বর আবিষ্কারের ইতিহাস শুরু হয় ১৯৩০-এর দশকে স্থানীয় স্কুল শিক্ষক মুহম্মদ হানিফ পাঠান কর্তৃক ছাপাঙ্কিত রৌপ্যমুদ্রা আবিষ্কারের মাধ্যমে। পরবর্তীতে অধ্যাপক সুফি মোস্তাফিজুর রহমান ও তার দল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দীর্ঘ পরিসরে খনন ও গবেষণার মাধ্যমে একটি আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন দুর্গ-নগর সভ্যতা উদ্ঘাটন করেন, যা বাংলাদেশের প্রাচীনতম শহুরে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। স্থানীয় মানুষ দীর্ঘদিন ধরে উয়ারী বটেশ্বর এলাকায় লাল-কালো মৃৎপাত্র ও পুরনো ধাতব সামগ্রী খুঁজে পেত। ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মুহাম্মদ শাহনূর আলম (শাহনূর আশরাফুল) এ স্থানের বৈজ্ঞানিক খননকাজ শুরু করেন। এর মাধ্যমে উয়ারী বটেশ্বর বাংলাদেশের প্রাচীন নগরায়ণের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় উন্মোচিত হয়।
উয়ারী বটেশ্বরে প্রাপ্ত নিদর্শন
উয়ারী বটেশ্বর-এ আবিষ্কৃত হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন একটি দুর্গ-নগর, বন্দর, রাস্তা, পোড়ামাটির ফলক, কাঁচের পুঁতি এবং উপমহাদেশের প্রাচীনতম ছাপাঙ্কিত রৌপ্যমুদ্রা। এই নিদর্শনগুলো বাংলার প্রাচীন বাণিজ্য ও নগর সভ্যতার এক গৌরবময় অধ্যায়ের প্রমাণ বহন করে। নগর পরিকল্পনা ও দুর্গপ্রাচীর, উয়ারি-বটেশ্বর একটি সুনির্মিত দুর্গনগরী ছিল, প্রায় ২৫০০ বছরের পুরনো ইট-দেয়াল, প্রতিরক্ষা প্রাচীর ও নগর পরিকল্পনার চিহ্ন পাওয়া গেছে, নগরীর চারপাশে খাল ও কৃত্রিম প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা ছিল।
মুদ্রা-ভাণ্ডার ও ছাপাঙ্কিত রৌপ্যমুদ্রা
এই অঞ্চলে মুদ্রা-ভাণ্ডার ছাড়াও উপমহাদেশের প্রাচীনতম ছাপাঙ্কিত রৌপ্যমুদ্রা পাওয়া গেছে। এখানে প্রচুর পাঞ্চ মার্কড কয়েন (চিহ্নিত মুদ্রা) আবিষ্কৃত হয়েছে। এগুলি ছিল খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ-তৃতীয় শতাব্দীর। এ থেকে বোঝা যায়,উয়ারী বটেশ্বর একটি সমৃদ্ধ অর্থনৈতিক কেন্দ্র ছিল।
মৃৎপাত্র ও গৃহস্থালি সামগ্রী
কালো-লাল পাত্র, লাল পালিশ করা মৃৎপাত্র, ভাঁড়, হাঁড়ি, থালা ইত্যাদি পাওয়া গেছে। মৃৎশিল্পে উচ্চমানের কারিগরির প্রমাণ মেলে।
কাচের দানা ও গয়না
বর্ণিল কাচের দানা, কঙ্কনের টুকরো, নীলকান্তমণি প্রমাণ করে যে এ নগরীতে গয়না তৈরির কারখানা ছিল। এগুলি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের সঙ্গে বাণিজ্যের চিহ্ন বহন করে।
লোহা ও ধাতব সামগ্রী
লোহার ছুরি, বর্শা, কৃষিজ সরঞ্জাম, দা ও অস্ত্রশস্ত্র পাওয়া গেছে। ধাতব প্রযুক্তির ব্যবহার উয়ারী বটেশ্বরের অগ্রসর সভ্যতার সাক্ষ্য বহন করে।
ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক নিদর্শন
উয়ারী বটেশ্বরের ধর্মীয় নিদর্শন হিসেবে বৌদ্ধ সংস্কৃতির ইঙ্গিত পাওয়া যায়, বিশেষ করে প্রাপ্ত নবড্ মৃৎপাত্র থেকে। সাংস্কৃতিক নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন নগরকেন্দ্র, পোড়ামাটির ফলক, আধা-মূল্যবান পাথর ও কাঁচের পুঁতি, মুদ্রার মজুদ, এবং উপমহাদেশের প্রাচীনতম ছাপাঙ্কিত রৌপ্যমুদ্রা। এটি একটি সমৃদ্ধ নগর ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র ছিল, যার প্রমাণ হিসেবে পাকা রাস্তা ও পরিখার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এখানে প্রাচীন স্থাপত্যের ভিত্তি, ধর্মীয় প্রতীক ও পূজার সামগ্রীও উদ্ধার হয়েছে। এ থেকে অনুমান করা যায় যে বৌদ্ধ বা প্রাক-বৌদ্ধ ধর্মচর্চা এখানে বিদ্যমান ছিল।
বাণিজ্য ও আন্তর্জাতিক সংযোগ
উয়ারী বটেশ্বর একটি প্রাচীন নদীবন্দর ও অন্তর্দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকেন্দ্র ছিল, যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং রোমান সাম্রাজ্যের সাথে বাণিজ্য করত। এখানে পাওয়া রৌপ্যমুদ্রা, বাটখারা, কাঁচের পুঁতি এবং ধাতব অলঙ্কার এই সমৃদ্ধ বাণিজ্যের সাক্ষ্য বহন করে। টলেমির বিবরণ থেকে অনুমান করা হয় যে, উয়ারী বটেশ্বর ছিল গঙ্গারিদাই নামক সমৃদ্ধ জনপদের অংশ এবং সিল্ক রুটের সাথেও এর সংযোগ ছিল।
উয়ারী বটেশ্বরের অবস্থান ছিল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সামুদ্রিক বাণিজ্য রুটের সঙ্গে যুক্ত। রোমান সাম্রাজ্যের সঙ্গে এ জনপদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল বলে ধারণা করা হয়। এখানে পাওয়া কাচের দানা, বিদেশি পণ্য ও প্রযুক্তির ছাপ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সাক্ষ্য দেয়। প্রাচীন “মুসলিন” বা উৎকৃষ্ট বস্ত্রও এখানকার বাণিজ্যের অংশ ছিল বলে ধারণা করা হয়।
সাংস্কৃতিক ও সামাজিক জীবন
উয়ারী বটেশ্বরের সাংস্কৃতিক জীবন ছিল অত্যন্ত উন্নত ও সমৃদ্ধ। তাদের সামাজিক জীবনও ছিল সুসংগঠিত, যা মুদ্রায় প্রাপ্ত বিভিন্ন প্রতীক, উন্নত নগর পরিকল্পনা, এবং দক্ষ কারুশিল্পের মাধ্যমে পরিলক্ষিত হয়। তারা উন্নত মানের পোড়ামাটির সামগ্রী তৈরি করত এবং তাদের সমাজে মুদ্রার প্রচলন ছিল, যা তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্তরবিন্যাস নির্দেশ করে। উয়ারী বটেশ্বরে প্রাপ্ত ছাপাঙ্কিত রৌপ্য মুদ্রায় সূর্যদেবতা, ছয়-ভুজবিশিষ্ট প্রতীক, পর্বত ও অর্ধচন্দ্র, নন্দীপদ, বলযুক্ত প্রতীক এবং বিভিন্ন জ্যামিতিক নকশা পাওয়া গেছে, যা তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের পরিচয় বহন করে। উয়ারী বটেশ্বরে একটি সুসংগঠিত নগর সভ্যতার প্রমাণ মিলেছে।
এখানে দুর্গ, পরিখা, রাস্তা ও পাশের রাস্তা ছিল, যা তাদের উন্নত নগর জীবনের পরিচায়ক। ছাপাঙ্কিত রৌপ্য মুদ্রার প্রাপ্তি ইঙ্গিত দেয় যে তাদের একটি সুশৃঙ্খল অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও মুদ্রা ব্যবস্থার প্রচলন ছিল। মুদ্রার প্রচলন থেকে ধারণা করা যায় যে সমাজে একটি স্তরবিন্যাস বিদ্যমান ছিল, যা তাদের সামাজিক জীবনকে সুসংগঠিত করেছিল। মুদ্রা, নন্দীপদ ও স্বস্তিকা প্রতীকের উপস্থিতি তাদের সমাজে হিন্দুধর্মের প্রভাব এবং সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় রীতিনীতির প্রচলন নির্দেশ করে। উয়ারী বটেশ্বর ছিল শুধু বাণিজ্যকেন্দ্র নয়, একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রও। শহর পরিকল্পনা, স্থাপত্য ও ধর্মীয় নিদর্শন একটি সুশৃঙ্খল সমাজের প্রমাণ বহন করে। স্থানীয়রা দক্ষ কারিগর, কৃষিজীবী ও ব্যবসায়ী ছিল।
বাংলাদেশের ইতিহাসে উয়ারি-বটেশ্বরের গুরুত্ব
বাংলাদেশের ইতিহাসে উয়ারী বটেশ্বরের গুরুত্ব অপরিসীম, কারণ এটি মৌর্য-পূর্ববর্তী যুগের একটি গুরুত্বপূর্ণ নগর কেন্দ্র ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। এই প্রাচীন স্থান থেকে প্রাপ্ত পাঞ্চ-মার্ক করা মুদ্রা, হাতিয়ার, পাথরের পুঁতি, এবং নর্দার্ন ব্ল্যাক পলিশড ওয়ার (NBPW) শিল্পকর্ম থেকে প্রমাণিত হয় যে, খ্রিস্টপূর্ব ৪০০ অব্দ থেকে ১০০ অব্দের মধ্যে এখানে একটি সমৃদ্ধ সভ্যতা বিকশিত হয়েছিল। উয়ারী বটেশ্বর শুধুমাত্র প্রাচীন নগর সভ্যতাকেই তুলে ধরে না, বরং এটি সমুদ্র বাণিজ্যের সাথেও সম্পর্কিত ছিল এবং প্রাচীন বাংলার ইতিহাসের একটি সমৃদ্ধ ও গৌরবময় অধ্যায় হিসেবে পরিচিত। এ আবিষ্কার প্রমাণ করে যে উয়ারী বটেশ্বর দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রাচীন বাণিজ্যকেন্দ্র ছিল এবং খ্রিস্টপূর্ব যুগেই বাংলায় নগর সভ্যতা বিকশিত হয়েছিল।
উয়ারী বটেশ্বরের ঐতিহাসিক পরিচয়
এই স্থানটি প্রাচীন বাংলার একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র এবং নগর সভ্যতার নিদর্শন বহন করে। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসকে আরও গভীর ও প্রাচীন করে তুলেছে। উয়ারী বটেশ্বরের আবিষ্কার বাংলাদেশে প্রত্নতত্ত্ব গবেষণাকে নতুন মাত্রা দিয়েছে।
উয়ারী বটেশ্বরের সংরক্ষণ ও বর্তমান অবস্থা
উয়ারী বটেশ্বরে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন আবিষ্কারের পর থেকে এর সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের ব্যবস্থা সীমিত, কিছু নিদর্শন বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এবং ঐতিহ্য অনুসন্ধান ও গবেষণা কেন্দ্র-এর হেফাজতে আছে, তবে একটি একক জাদুঘরে প্রদর্শনের ব্যবস্থা হয়নি। হানিফ পাঠানের পরিবার এবং প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এই স্থানটির সংরক্ষণ ও গবেষণায় কাজ করছে, তবে ভবিষ্যতে একটি পূর্ণাঙ্গ উন্মুক্ত জাদুঘর বা সংশ্লিষ্ট জাদুঘর প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করা হয়। বর্তমানে উয়ারী বটেশ্বর এলাকায় প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর ও সংরক্ষণ কার্যক্রম চলছে। তবে নগরায়ণ, অবহেলা ও পরিবেশগত কারণে অনেক নিদর্শন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গবেষক ও সরকারের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন এই ঐতিহ্য সংরক্ষণে।
উয়ারী বটেশ্বরের প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার বাংলাদেশের ইতিহাসচর্চায় এক যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। এতদিন ধারণা করা হতো, বাংলায় নগরায়ণ ও উন্নত অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে ওঠে মৌর্য বা গুপ্ত যুগের পরবর্তী সময়ে। কিন্তু উয়ারী বটেশ্বরের নিদর্শন প্রমাণ করে, খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ থেকে দ্বিতীয় শতাব্দীতেই এ অঞ্চলে নগর সভ্যতা, বাণিজ্য, কারুশিল্প ও উন্নত সামাজিক কাঠামোর উন্মেষ ঘটেছিল।
এ নগরীর প্রতিরক্ষা প্রাচীর, সুনিয়ন্ত্রিত নগর পরিকল্পনা, লোহার ব্যবহার, পাঞ্চ মার্কড কয়েন, কাচের দানা, উন্নত মৃৎপাত্র এবং ধর্মীয় প্রতীকগুলো শুধু এক প্রাচীন জনপদের জীবনযাত্রা নয়, বরং এক আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকেন্দ্রের পরিচয় বহন করে। এটি ছিল এমন এক স্থান, যেখানে নদীপথের মাধ্যমে ভারতবর্ষের অভ্যন্তরীণ অঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন হতো। ফলে উয়ারী বটেশ্বর ছিল গ্লোবালাইজেশনের প্রাচীন কেন্দ্র, যেখানে রোমান সাম্রাজ্য পর্যন্ত পণ্যের আদান-প্রদান ঘটত।
তবে এর গুরুত্ব যতই হোক না কেন, উয়ারী বটেশ্বর আজ সংরক্ষণের অভাবে ঝুঁকির মুখে। নগরায়ণ, অবৈধ খনন, পরিবেশগত ক্ষয় এবং জনগণের অজ্ঞতার কারণে অনেক নিদর্শন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই উয়ারী বটেশ্বরকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও প্রচার করা জরুরি। এটি শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্ব ইতিহাসেরও এক মূল্যবান অধ্যায়।
সব মিলিয়ে বলা যায়, উয়ারী বটেশ্বরের ঐতিহাসিক গুরুত্ব শুধুমাত্র অতীতের গৌরব বর্ণনা নয়, বরং বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি অনুপ্রেরণার উৎস। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, এই ভূখণ্ড একদিন ছিল বিশ্ববাণিজ্য ও সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র। সঠিক গবেষণা, সংরক্ষণ ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে উয়ারী বটেশ্বরকে একটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান (World Heritage Site) হিসেবে স্বীকৃতি আদায় সম্ভব, যা বাংলাদেশের গৌরবকে বিশ্বদরবারে আরও উজ্জ্বল করবে।
তথ্যসূত্র
আলম, শাহনূর আশরাফুল।উয়ারী বটেশ্বর: প্রাচীন বাংলার নগরায়ণ ও বাণিজ্য কেন্দ্র। ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশনা, ১৯৯৫।
আহমেদ, হোসেন। বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব: প্রাচীন নগর ও জনপদ। ঢাকা: বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র, ২০০১।
চৌধুরী, তন্ময়। দক্ষিণ এশিয়ার প্রাচীন বাণিজ্য ও উয়ারি-বটেশ্বর। কলকাতা: ইস্ট ইন্ডিয়া প্রেস, ২০০৫।
ইসলাম, জিয়াউল। উয়ারী বটেশ্বর খনন প্রতিবেদন। ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ, ২০১০।
সরকার, রফিকুল। বাংলাদেশের প্রাচীন নগরায়ণ ও সভ্যতা। ঢাকা: প্রত্নতত্ত্ব প্রকাশনা, ২০১৫।