Saturday, October 4, 2025
Homeজীবনীএরিস্টটল এর জীবনী

এরিস্টটল এর জীবনী

এরিস্টটল এর জীবনী

এরিস্টটল (খ্রিস্টপূর্ব ৩৮৪ – ৩২২) ছিলেন একজন বিখ্যাত গ্রিক দার্শনিক এবং বিজ্ঞানী। তিনি প্লেটোর ছাত্র ছিলেন এবং পরবর্তীতে আলেকজান্ডার দি গ্রেটের শিক্ষক হিসেবেও পরিচিত। এরিস্টটল যুক্তিবিদ্যা, নীতিশাস্ত্র, রাজনীতি, জীববিজ্ঞান, পদার্থবিদ্যা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তাঁকে প্রাণিবিজ্ঞানের জনকও বলা হয়।

জন্ম ও পরিবার: এরিস্টটল খ্রিস্টপূর্ব ৩৮৪ সালে মেসিডোনিয়ার (উত্তর গ্রীস) স্ট্যাগিরা নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা নিকোমেকাস ছিলেন একজন চিকিৎসক এবং রাজার সভাসদ।

একাডেমিতে শিক্ষা: ১৭ বা ১৮ বছর বয়সে তিনি এথেন্সে প্লেটোর একাডেমিতে যোগ দেন এবং সেখানে ৩৭ বছর বয়স পর্যন্ত অবস্থান করেন। প্লেটোর মৃত্যুর পর তিনি একাডেমির দায়িত্ব গ্রহণ করেননি, বরং নিজের গবেষণা ও শিক্ষাদান চালিয়ে যান।

লাইসিয়ামের প্রতিষ্ঠা: এরিস্টটল এথেন্সে ‘লাইসিয়াম’ নামে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন, যা প্লেটোর একাডেমির প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরিচিত ছিল। এখানে তিনি তাঁর অনুসারীদের নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা ও আলোচনা করতেন।

আলেকজান্ডারের শিক্ষকতা: এরিস্টটল তরুণ আলেকজান্ডারকে (পরবর্তীতে আলেকজান্ডার দি গ্রেট) শিক্ষা দেন এবং তাঁকে গ্রিক সংস্কৃতি ও দর্শনের সাথে পরিচিত করেন।

মৃত্যু: এরিস্টটল খ্রিস্টপূর্ব ৩২২ সালে ইউবোইয়া দ্বীপে মারা যান।

অবদান: এরিস্টটল যুক্তিবিদ্যা, নীতিশাস্ত্র, রাজনীতি, বিজ্ঞান, সাহিত্য ও শিল্পের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গভীর জ্ঞান অর্জন করেন এবং এগুলোর উপর মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেন। তাঁর রচিত গ্রন্থগুলো পশ্চিমা দর্শনের ভিত্তি স্থাপন করেছে।

দর্শন: এরিস্টটলের দর্শন প্লেটোর থেকে কিছুটা ভিন্ন ছিল। তিনি বস্তুগত জগৎকে বেশি গুরুত্ব দিতেন এবং অভিজ্ঞতাবাদী দর্শনের দিকে ঝুঁকে ছিলেন।

এরিস্টটলের কাজের ক্ষেত্র:

যুক্তিবিদ্যা: এরিস্টটল যুক্তিবিদ্যার ভিত্তি স্থাপন করেন এবং এর বিভিন্ন নিয়মকানুন ও পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন।
নীতিশাস্ত্র: তিনি নীতিশাস্ত্রের উপর “এথিকস” নামক গ্রন্থ রচনা করেন, যেখানে তিনি সুখ, ন্যায়বিচার, সাহস ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেন।
রাজনীতি: এরিস্টটলের “পলিটিক্স” গ্রন্থটি রাজনীতি ও সরকার ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করে। এটি পশ্চিমা রাজনৈতিক চিন্তাধারার উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে।

বিজ্ঞান: এরিস্টটল পদার্থবিদ্যা, জীববিজ্ঞান, প্রাণিবিদ্যা, জ্যোতির্বিজ্ঞান সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করেন।

এরিস্টটলের প্রভাব:

এরিস্টটলের কাজ ও চিন্তা আজও বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে চলেছে। তাঁর যুক্তিবিদ্যা, নীতিশাস্ত্র, রাজনীতি, বিজ্ঞান বিষয়ক রচনাগুলি বিভিন্ন বিদ্যাপীঠে পঠিত ও আলোচিত হয়। তিনি “পাশ্চাত্য দর্শনের জনক” হিসেবেও পরিচিত।

তথ্যসূত্র:

Diogenes Laërtius, Lives and Opinions of Eminent Philosophers

Aristotle – Stanford Encyclopedia of Philosophy

Internet Encyclopedia of Philosophy (IEP)

Encyclopaedia Britannica

Itihasar Golpo
Itihasar Golpohttps://itihasargolpo.com
Step into the past with our unforgettable historical journey. Discover the secrets of history on our captivating journey.
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments