নবাব সিরাজউদ্দৌলা
নবাব সিরাজউদ্দৌলা ছিলেন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব। তিনি ১৭৫৬ সালে বাংলার নবাব হিসেবে ক্ষমতায় আসেন এবং তাঁর শাসনকাল ছিল অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত হলেও ইতিহাসে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে পলাশীর যুদ্ধ (১৭৫৭) তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয় এবং ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের ভিত্তি স্থাপিত হয়।
সংক্ষিপ্ত জীবনী:
পুরো নাম: মির্জা মুহম্মদ সিরাজউদ্দৌলা
জন্ম: ১৭৩৩ খ্রিস্টাব্দ
পিতা: জৈনউদ্দিন (নবাব আলিবর্দী খানের জামাতা)
মাতুল: নবাব আলিবর্দী খান
মৃত্যু: ২৩ জুন, ১৭৫৭ (পলাশীর যুদ্ধের পর হত্যা করা হয়)
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট:
নবাব সিরাজউদ্দৌলা যখন ক্ষমতায় আসেন, তখন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বেঙ্গল অঞ্চলে বাণিজ্যিক কার্যক্রমের নামে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করছিল। নবাবের সাথে ব্রিটিশদের সম্পর্ক ছিল উত্তেজনাপূর্ণ, কারণ তিনি কোম্পানির শক্তিবৃদ্ধিকে একপ্রকার হুমকি হিসেবে দেখতেন।
পলাশীর যুদ্ধ (১৭৫৭):
স্থান: নদীয়া জেলার পলাশী নামক স্থানে
তারিখ: ২৩ জুন, ১৭৫৭
বিপক্ষ: নবাব সিরাজউদ্দৌলা বনাম ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাবাহিনী (রবার্ট ক্লাইভের নেতৃত্বে)
বিশ্বাসঘাতকতা: নবাবের সেনাপতি মীর জাফর যুদ্ধক্ষেত্রে বিশ্বাসঘাতকতা করেন
ফলাফল: সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় ও পরবর্তী হত্যাকাণ্ড
মৃত্যু:
যুদ্ধ পরাজয়ের পর নবাব সিরাজউদ্দৌলা পালিয়ে যান কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে ধরা পড়েন। মীর জাফরের নির্দেশে ১৭৫৭ সালের ২ জুলাই তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
সিরাজউদ্দৌলার পতনের মধ্য দিয়ে ভারতবর্ষে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সূচনা ঘটে।
তাঁকে একদিকে দুর্বল শাসক বলা হলেও অন্যদিকে দেশপ্রেমিক, সাহসী ও প্রতিরোধকারী নবাব হিসেবেও দেখা হয়।
বাংলার স্বাধীনতার শেষ প্রতীক হিসেবে তিনি ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন।
স্মরণ ও মূল্যায়ন:
সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু এবং পলাশীর যুদ্ধ বাংলা সাহিত্য, নাটক, চলচ্চিত্র ও ইতিহাসচর্চায় একটি আবেগঘন অধ্যায়। তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন নাটক, সিনেমা ও উপন্যাস রচিত হয়েছে।
🖥️ অনলাইন ও প্রামাণ্য উৎস:
British Library Archives
https://www.bl.uk/
পলাশীর যুদ্ধ সংক্রান্ত ব্রিটিশ দৃষ্টিকোণ থেকে নথিপত্র ও চিঠিপত্র সংরক্ষিত আছে।
National Archives of India
পলাশী যুদ্ধ এবং সিরাজউদ্দৌলা সংক্রান্ত সরকারি দলিল পাওয়া যায়।