মুগস থারবার নামক এক ‘ভয়ঙ্কর’ কুকুরের গল্প
লোকেশন: গ্রিন লন কবরস্থান, কলম্বাস, ওহাইও
প্রসঙ্গ: জেমস থারবার ও তাঁর কামড়ে-প্রেমী পোষা কুকুর মুগস
এক স্মৃতিস্তম্ভের বিস্ময়
গ্রিন লন কবরস্থানে হেঁটে চলার সময় চোখে পড়বে এক বিশাল স্মৃতিস্তম্ভ। প্রথমে মনে হবে এটি কোনো বিখ্যাত ব্যক্তির সমাধি। কিন্তু একটু খুঁজলেই জানা যাবে, এটি আসলে এক কুকুরের জন্য—নাম মুগস থারবার, যে তার জীবদ্দশায় ‘মানুষ কামড়ানো’তে এক নতুন ইতিহাস গড়েছিল।
এক চরিত্রজগতের ভয়ঙ্কর প্রিয় কুকুর
মুগস ছিল এয়ারডেল টেরিয়ার জাতের কুকুর। তার আচরণ ছিল চরমভাবে ‘অনিশ্চিত’—রাগের কারণ থাক বা না থাক, হঠাৎ করে কামড়ে বসা ছিল তার স্বভাব। এমনকি খাবার দেওয়ার সময়ও পরিবারের সদস্যরা তাকে সরাসরি মুখোমুখি হতেন না। মুগসের জন্য তৈরি হয়েছিল নিজস্ব কাঠের ডাইনিং টেবিল!
কামড়ের তালিকায় ছিল ৪০+ জন!
মুগস এত মানুষকে কামড়িয়েছিল যে থারবার পরিবার প্রতি ক্রিসমাসে ভিকটিমদের চকলেট পাঠাতেন! এই ‘ভিকটিম তালিকা’ একসময় ৪০ জনের বেশি হয়ে গিয়েছিল।
এক কিংবদন্তির সমাধি
মুগসের মৃত্যুর পর প্রথমে তাকে রাস্তার পাশে কবর দেওয়া হয়েছিল। পরে থারবারের মায়ের ইচ্ছায় গ্রিন লন কবরস্থানে বিশাল স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হয়।
সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয় হলো—তার পাশেই শায়িত আছেন লেখক জেমস থারবার নিজে, কিন্তু তার কবর ছোট, সাধারণ এবং একপাশে সরানো।
খোদাই করা একটি ল্যাটিন বাক্য যেন চিরকাল সতর্ক করে দেয়:
“Cave Canem” – “কুকুর থেকে সাবধান”
মুগসের গল্প সাহিত্যেও অমর
থারবার তাঁর বিখ্যাত ছোটগল্প “The Dog That Bit People”-এ মুগসের কাহিনী মজার ভঙ্গিতে তুলে ধরেছেন। গল্পটি প্রকাশিত হয়েছিল The New Yorker পত্রিকায়, যা আজও ব্যঙ্গাত্মক সাহিত্যের এক অনন্য উদাহরণ।
কামড়ানো সত্ত্বেও ভালোবাসার প্রতীক
সব কুকুর হয়তো মানুষের সেরা বন্ধু নয়। কেউ কেউ কামড়ায়, ভয় দেখায়, আবার নিজের খাবারের টেবিল দখল করে।
তবুও—তারা ভালোবাসা পায়, স্মৃতির অংশ হয়ে ওঠে।
মুগস থারবার ছিল তেমনই এক ব্যতিক্রমী চরিত্র—যে কামড় দিয়েই ইতিহাস গড়েছিল।
Sources
- James Thurber – “The Dog That Bit People”