হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এর ইতিহাস
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ বাংলাদেশের পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী থেকে কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলা পর্যন্ত যুক্তকারী একটি রেলসেতু। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘ রেলসেতু হিসেবে পরিচিত। পাবনা জেলার পাকশী রেলস্টেশনের দক্ষিণে পদ্মা নদীর উপর এই সেতুটি অবস্থিত। এই সেতুর নির্মাণকাল ১৯০৯-১৯১৫। তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জের নাম অনুসারে এই সেতুর নামকরণ করা হয়। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের দৈর্ঘ্য ১,৭৯৮.৩২ মিটার বা ৫৮৯৪ ফুট বা ১.৮ কিমি। এর উপর দুটি ব্রড-গেজ রেললাইন রয়েছে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলকে সংযুক্ত করার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হলো হার্ডিঞ্জ ব্রিজ। এটি মূলত পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত একটি রেলসেতু, যা বাংলাদেশের যোগাযোগব্যবস্থা, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ১৯১৫ সালের ৪ মার্চ উদ্বোধন করা হয়। বর্তমানে এটি শুধু একটি পরিবহন অবকাঠামো নয়, বরং ইতিহাস, স্থাপত্যশৈলী এবং ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।
নির্মাণের পটভূমি
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণের পটভূমি হল ব্রিটিশ শাসনামলে অবিভক্ত ভারতের উত্তরবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা ও উত্তরবঙ্গের সঙ্গে কলকাতার যোগাযোগ সহজতর করার প্রয়োজনীয়তা থেকে শুরু হয়। ১৯০৮ সালে সেতু নির্মাণের অনুমোদন লাভ করার পর ব্রিটিশ প্রকৌশলী স্যার রবার্ট গেইলস এর নেতৃত্বে নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং ১৯১৫ সালে এটি চালু হয়, যা এই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিপ্লব এনেছিল। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে ব্রিটিশ ভারতীয় সরকার বুঝতে পারে যে, উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপনের জন্য একটি শক্তিশালী সেতুর প্রয়োজন। পদ্মা নদী বিশাল এবং প্রবল স্রোতসম্পন্ন হওয়ায় এর ওপর সেতু নির্মাণ ছিল অত্যন্ত কঠিন একটি কাজ। তৎকালীন সময়ে বঙ্গদেশের (বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ মিলিয়ে) অর্থনীতি মূলত কৃষিনির্ভর ছিল এবং উত্তরাঞ্চলের শস্য, বিশেষ করে পাট, চাল ও গম সহজে কলকাতায় পরিবহনের জন্য রেলপথে একটি সংযোগ সেতু অপরিহার্য হয়ে ওঠে। এভাবেই হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা গৃহীত হয়।
নকশা ও প্রকৌশল
হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নকশা তৈরি ও প্রকৌশলের দায়িত্বে ছিলেন ব্রিটিশ প্রকৌশলী স্যার রবার্ট উইলিয়াম গেইলস। ১৯০৮ সালে এটি নির্মাণের অনুমতি লাভের পর, ব্রিটিশ প্রকৌশলীরা এর নকশা ও নির্মাণকাজ পরিচালনা করেন, যার ফলস্বরূপ ১৯১৫ সালে পদ্মা নদীর উপর এই স্টিল রেলওয়ে ট্রাস ব্রিজটি চালু হয়। এটি বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে সেতু যা পাবনা ও কুষ্টিয়া জেলাকে সংযুক্ত করে। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ছিল সেই সময়ের আধুনিক প্রকৌশলের এক অনন্য নিদর্শন। এটি নকশা করেছিলেন ফ্রিম্যান ফক্স অ্যান্ড পার্টনার্স নামক একটি ব্রিটিশ প্রকৌশল প্রতিষ্ঠান।
সেতুর দৈর্ঘ্য: ১,৭৯৮.৩২ মিটার বা ৫৮৯৪ ফুট (১.৮ কিমি)।
স্প্যানের সংখ্যা: হার্ডিঞ্জ ব্রিজে মোট ১৫টি স্প্যান রয়েছে। এগুলো মূলত ১৫টি ইস্পাত কাঠামো-ভিত্তিক স্প্যান, যার প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৩৪৪ ফুট ১১/২ ইঞ্চি এবং ওজন ১,২৫০ টন।
উপাদান: হার্ডিঞ্জ ব্রিজের মূল উপাদান ইস্পাত। এটি একটি ইস্পাত নির্মিত রেলসেতু যা পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত হয়েছে এবং এর কাঠামো ইস্পাত দিয়েই তৈরি। ভিত্তি পাথর ও কংক্রিটের পিলার। এটি ছিল সেসময়কার ভারতীয় উপমহাদেশে নির্মিত সবচেয়ে দীর্ঘ রেলসেতুগুলির একটি।
নির্মাণ প্রক্রিয়া
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণ ছিল অত্যন্ত জটিল ও ব্যয়বহুল। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল পদ্মা নদীর খরস্রোতা ও পরিবর্তনশীল স্রোতকে নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং নদীর তীর ভাঙন রোধ করা। এর জন্য ১৯০৯ থেকে ১৯১২ সালের মধ্যে নদীর তলদেশে ১৯০ থেকে ১৬০ ফুট গভীরতায় কূপ খনন করে ভিত্তি স্থাপন করা হয়। এরপর ১৫টি স্টিলের ট্রাসযুক্ত প্রধান গার্ডারগুলো স্থাপন করে ১.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুটি নির্মাণ করা হয়।
নির্মাণের মূল পর্যায় ও চ্যালেঞ্জ
প্রস্তাব ও অনুমতি: অবিভক্ত ভারতের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করতে ১৮৮৯ সালে ব্রিটিশ সরকার পদ্মা নদীর উপর রেলসেতু নির্মাণের প্রস্তাব করে এবং ১৯০৮ সালে এই সেতু নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়।
সময়কাল ও প্রকৌশলী: ব্রিটিশ প্রকৌশলী স্যার রবার্ট উইলিয়াম গেইলস এই সেতু নির্মাণের দায়িত্বে ছিলেন এবং ১৯১০ সাল থেকে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
ভিত্তি স্থাপন: পদ্মার নরম পলিমাটির ওপর ভিত্তি স্থাপন করা ছিল অত্যন্ত কঠিন কাজ। ১৯০৯-১৯১২ সালের মধ্যে ১৯০ থেকে ১৬০ ফুট গভীরতায় কূপ খনন করে সেতুর ৫টি কূপ স্থাপন করা হয়।
স্রোত নিয়ন্ত্রণ: হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণের অন্যতম কঠিন কাজ ছিল খরস্রোতা পদ্মার স্রোত নিয়ন্ত্রণ করা এবং সেতুর নিচ দিয়ে স্থায়ীভাবে নদী প্রবাহ নিশ্চিত করা। নদীর গভীর তলদেশে পিলার বসানোর জন্য বিশেষভাবে কেসন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছিল। প্রতিটি পিলার নদীর স্রোত ও বন্যার চাপ সামলানোর মতো শক্তিশালীভাবে নির্মিত হয়। সেতুর প্রতিটি খিলান বিশাল ইস্পাতের কাঠামো দিয়ে তৈরি, যা পদ্মার শক্তিশালী স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে থাকতে সক্ষম।
সেতু কাঠামো: ১৫টি স্টিলের ট্রাসযুক্ত বিশাল গার্ডারগুলো পরিবর্তনশীল “পেটিট” ধরনের।
সমাপ্তি ও উদ্বোধন: ১৯১২ সালে এর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর ১৯১৫ সালের ৪ মার্চ অবিভক্ত ভারতের ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ সেতুটি উদ্বোধন করেন এবং তাঁর নামানুসারেই এর নামকরণ হয় হার্ডিঞ্জ ব্রিজ। এই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে তৎকালীন সময়ে ৪ কোটি ৫১ লক্ষ ৩২ হাজার ১ শত ৬৪ টাকা ব্যয় হয়েছিল।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ শুধু একটি রেলসেতু নয়, এটি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলের একটি উল্লেখযোগ্য প্রকৌশলগত নিদর্শন ও ঐতিহাসিক স্থাপনা যা বাংলাদেশের পরিবহন ও অর্থনৈতিক ইতিহাসে গভীর প্রভাব ফেলেছে। কলকাতা ও উত্তরবঙ্গের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ স্থাপন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বৃদ্ধি এবং উভয় অঞ্চলের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্য নিয়ে এটি নির্মিত হয়েছিল। এই সেতুটি বাংলাদেশের দীর্ঘতম রেলসেতু এবং এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার মেরুদণ্ডস্বরূপ।
অর্থনৈতিক গুরুত্ব: হার্ডিঞ্জ ব্রিজ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যোগাযোগ এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম, যা পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখে। আসাম, ত্রিপুরা এবং উত্তরবঙ্গের সাথে কলকাতার সংযোগ সহজ করে পূর্ব ও পশ্চিম বাংলার মধ্যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বৃদ্ধি করে এবং বাংলাদেশের পণ্য ও যাত্রী চলাচলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সামাজিক প্রভাব: হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মিত হওয়ার পর পাকশী ও এর আশেপাশে নতুন জনবসতি ও ব্যবসার সুযোগ তৈরি হয়, যা স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনে এবং এই অঞ্চলকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন কেন্দ্রে পরিণত করে। এটি ব্রিটিশ আমলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথ খুলে দেয় এবং ভারতের পূর্বাঞ্চলে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনেও বড় ভূমিকা রাখে। মুক্তিযুদ্ধের সময় এটি যুদ্ধের একটি কৌশলগত কেন্দ্র ছিল। উত্তরবঙ্গের মানুষ রাজধানী কলকাতার সঙ্গে সহজে যুক্ত হতে পারে, ফলে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ে।
রাজনৈতিক প্রভাব: হার্ডিঞ্জ ব্রিজ সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দল বা ঘটনা থেকে উদ্ভূত নয়, বরং ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে ভারতে যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বৃদ্ধির একটি প্রকৌশলগত ও প্রশাসনিক উদ্যোগ ছিল, যা মূলত তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জের নামে নামকরণ করা হয়। এর রাজনৈতিক প্রভাব ছিল পরোক্ষ, কারণ এটি ब्रिटिश সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক সক্ষমতা, অর্থনৈতিক শোষণ, এবং কলকাতা-পূর্ব বাংলার মধ্যে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সুবিধা অর্জনের একটি মাধ্যম ছিল, যা পরবর্তীতে ভারত ও পাকিস্তানের বিভক্তি এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় এই সেতুটি বহুবার কৌশলগতভাবে ব্যবহার করা হয়। পাকিস্তান আমলেও এটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ সামরিক যোগাযোগ পথ।
সেতুর উপর আঘাত ও সংস্কার
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিজের ওপর বিশেষ নজর রাখা হয়েছিল, কারণ এটি ছিল কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনারা বিস্ফোরক দিয়ে কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত করলেও মূল কাঠামো অক্ষত থাকে। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সরকার এটি সংস্কার করে পুনরায় চালু করে।
স্থাপত্য বৈশিষ্ট্য
হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নকশা মূলত পিন-জয়েন্ট ট্রাস (Pin-jointed truss) ভিত্তিক। প্রতিটি স্প্যান আর্চ আকৃতির এবং ইস্পাতের কাঠামো দিয়ে তৈরি। এর উচ্চতা ও দৈর্ঘ্য এমনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছিল যাতে বর্ষাকালে পদ্মার প্রবল স্রোত ও বন্যার পানি সহজে পার হতে পারে। আজও এর স্থাপত্যকলা দেখে বিস্মিত হতে হয়। শতাধিক বছর পার হলেও এর অধিকাংশ কাঠামো অটুট রয়েছে।
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতু
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ মূলত রেলসেতু। পরে এর পাশেই সড়কপথের জন্য লালন শাহ সেতু নির্মাণ করা হয় (২০০৪ সালে উদ্বোধনকৃত)। এই দুটি সেতু একসঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গকে দৃঢ়ভাবে সংযুক্ত করেছে। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ শুধু পরিবহন নয়, বরং বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতির এক প্রতীক। উত্তরবঙ্গের মানুষের কাছে এটি গর্বের বিষয়। বহু সাহিত্য, গান ও ফটোগ্রাফে ব্রিজটির উল্লেখ পাওয়া যায়।
বর্তমান অবস্থা
বর্তমানে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এখনও কার্যকর রয়েছে। প্রতিদিন উত্তরবঙ্গগামী ও দক্ষিণবঙ্গগামী অসংখ্য ট্রেন এটির উপর দিয়ে চলাচল করে। যদিও শতাধিক বছর অতিক্রান্ত হয়েছে, তবে যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের কারণে এটি এখনও দৃঢ়ভাবে টিকে আছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে নিয়মিত এটির সংস্কার করে থাকে। পাশাপাশি, এটি পর্যটন আকর্ষণ হিসেবেও গুরুত্ব পাচ্ছে। অনেক মানুষ সেতুটি দেখতে ও ছবি তুলতে এখানে আসেন।
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ কেবল একটি ইস্পাতের রেলসেতু নয়; এটি আসলে আমাদের জাতীয় ইতিহাস, প্রকৌশল দক্ষতা এবং সামাজিক-অর্থনৈতিক পরিবর্তনের এক জীবন্ত সাক্ষী। এক শতাব্দীরও বেশি সময় আগে যখন এটি নির্মিত হয়েছিল, তখন ব্রিটিশদের মূল লক্ষ্য ছিল বাণিজ্য ও প্রশাসনিক সুবিধা অর্জন করা। কিন্তু এই সেতুটি পরবর্তী সময়ে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের মানুষের জীবনযাত্রায় যে বিপুল পরিবর্তন নিয়ে এসেছে, তা ছিল প্রত্যাশার বাইরে।
সবশেষে বলা যায়, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ হচ্ছে বাংলাদেশি মানুষের গর্ব। এটি আমাদের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের সঙ্গে যুক্ত একটি সেতুবন্ধন। উত্তরবঙ্গের মানুষের কাছে এটি যেমন জীবনরেখা, তেমনি দেশের জন্য এটি অগ্রগতির প্রতীক। এর মাধ্যমে আমরা দেখতে পাই, একটি অবকাঠামো কিভাবে একটি অঞ্চলের অর্থনীতি, সংস্কৃতি, সমাজ ও রাজনীতিকে দীর্ঘমেয়াদে প্রভাবিত করতে পারে।
আজও প্রতিদিন যখন ট্রেনের গর্জন ভেসে আসে এই সেতুর বুক থেকে, তখন মনে হয়— হার্ডিঞ্জ ব্রিজ কেবল ইস্পাত আর কংক্রিটের কাঠামো নয়, বরং আমাদের জাতীয় ইতিহাসের এক অবিচ্ছেদ্য অধ্যায়। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এটি শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, বরং গর্ব, ঐতিহ্য এবং প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
তথ্যসূত্র
বাংলাদেশ রেলওয়ে, সরকারী প্রকাশনা ও প্রতিবেদন।
Ahmed, S. (1995). Bangladesh: Past and Present. University Press Limited (UPL), Dhaka.
Rahman, A. (2018). “Hardinge Bridge: A Historical Engineering Marvel.” The Daily Star.
UNESCO World Heritage & South Asian Infrastructure Archives.
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আর্কাইভস ও বাংলাদেশ জাতীয় আর্কাইভস।